Posts

Showing posts from July, 2020

ফেরিওয়ালা

Image
শহর জুড়ে দুঃখ বেঁচার মিছিল! সেই মিছিলে সামিল হওয়ার আশায় আমিও ঢের জমিয়েছি কষ্টগুলো বুকের ভেতর।  সিকি-আধুলি যেমন করে জমায় লোকে মাটির ভাঁড়ে, ঠিক তেমনই!  মুঠোভরতি নীল দুঃখ। কষ্ট, বিষাদ যাই বা বলো, সব তো একই! একটি ছোট্ট শ্রাবণ দিনের মেঘ,  মেঘের কাছে মিষ্টি জলের বৃষ্টি আছে ভিজিয়ে দেবার। খুব সাধারণ একটি কুড়ে ঘর, ঘরের কোণে বৃদ্ধ জারুল গাছ,  তাহার পাশে একটি সবুজ দিঘি। দিঘির জলে পদ্মপাতায় বৃষ্টি ঝড়ে নুপুর তালে খুব অকারণ। মেঘ ফুরিয়ে যায়, ফুরায় শ্রাবণ দিন। দিঘিই কেবল মেঘের জলে টুইটুম্বুর,  বাদলা দিনের ঋণ! আমার কষ্ট তাদের মতই খানিক,  বৃষ্টি জলে দিঘি টলোমল! মেঘের জল দিঘির গহীন যেমন মানায়,  তেমনি আমার চোখের কোণে বিষাদ লোনা জল! আমার দুঃখগুলো বেঁচবো কোন গাঁয়ে? দুঃখ নেবে? সিকি-আধুলি, দু-চার আনা যা খুশি তাই দেবে। দুঃখ নেবে?  নীলচে ভীষণ আকাশ-মতো দুঃখ আছে, বুকের কাছে! নেবে বলো?  হাতের চুরি, নাকের নোলক যা খুশি তাই দেবে!  ঝুলি ভর্তি দুঃখ নিয়ে ঘুরছি পথেপথে। দুঃখ নিয়ে ভাবছি কোথায় যাই, সবাই কেবল মুখেই বলে 'আছি!' হাত বাড়ালেই কেউ যে কোথাও নাই! ~আবীর

চৈত্রের মাঠ

Image
মগজ যখন খুবলে খায় গদ্যের শকুনেরা, তখন পদ্যের জোছনায় চৈত্রের মাঠ ভাসলেই কি? এন্ড্রোমিডা তারকাপুঞ্জের দূরত্ব পার করে দেয়া এক নিমিষের বিষয় হয়ে গেলেও, তা নিয়ে কাব্য করা ঢের দুঃসাহস!  ইন্দুস নদীর পারে তাঁবু গাড়া  বেশ একরোখা সেনাপতিকেও কলমের আঘাতে ঘায়েল করতে পারি- বারবার এই এতদিন পরে এসেও! নক্ষত্রপুঞ্জের গতিবিধি বরাবরই অবাক করে, কিন্তু আমার তৃষ্ণা তো মৃত জোনাকির প্রতি!  আলো দিয়ে মিলিয়ে যায় অচেনায়! জোনাকিদের জিজ্ঞেস করবো ভাবি,  'কোন তারা থেকে আলো নাও তোমরা?' তার আগেই মারা যায়! আমিও ফিরে আসি চৈত্রের মাঠে। শকুনে খুবলে খাওয়া মগজ নিয়ে দাড়িয়ে  অবাক চোখে দেখি, চৈত্রের মাঠ ভেসে যায় ভরা জোছনায়! কেবল আমার কলমটা হারিয়ে গেছে! জোনাকিরা খুঁজছে, পেয়ে যাব শীঘ্রই!  অনেক আলোকবর্ষের লেখা বাকি। নক্ষত্রদের গল্প জমে আছে ছায়াপথ জুড়ে!

অর্থ ও অর্থনীতি

Image
কবিতার পারিশ্রমিক হয় না প্রিয়।  'অর্থের' দাম পুঁজিবাদে যতই উঠুক  কবিতার 'অর্থ' মাপবে অর্থনীতির কোন সূচকে? অর্থ আর অর্থনীতি বড় ঠুনকো জিনিস।  তোমাদের পুঁজিবাদী সমাজ, রাষ্ট্র  সবই শেয়ারের দরে কিনে নিতে চায় চড়া সুদে। কিন্তু আঁধারের কোলে যে গোধূলী হারায়  তার কত দাম নির্ধারণ করবে বলো? লেখার মায়ায় যে আবেগের ছোঁয়া,  তা কি অর্থনীতির স্কেলে মাপা যায়? অর্থ নিয়ে অনর্থ করো তোমরা; আমি 'অর্থহীনে' 'অর্থ' খুঁজি।  তোমাদের 'অর্থ' ব্যাংকে জমা রাখো,  আমার 'অর্থ' মগজে আর অভিধানে। দুই 'অর্থের' মাঝে যে অনর্থক ফারাক   তার কি কোন 'অর্থ' হয়? তুমি পুঁজিবাদী সমাজের চাকর আমি 'কবিতাবাদী' রাজ্যের শাসক! আমাদের 'অর্থ' ও 'অর্থনীতি' দুই-ই ভিন্ন!  কবিতার কিই বা দিবে পারিশ্রমিক, বলো প্রিয়?  দিতে যদি চাও তো তোমার খোঁপায় গোঁজা রক্তজবাটাই দিও!

মিথ্যে কথার শহর

Image

পদ্মপাতার ছায়া

Image
আঁচল তোমার দখিন হাওয়ার সাথি পবন পানে তাল মিলিয়ে ওড়ে, আমার কেবল নিদ্রা বিহীন রাতি অহর্নিশ আঁকড়ে থাকা এই ঝড়ে।। মুঠোভরা স্বপ্ন নিয়ে এসে,  এক চিলতে রদ্দুর মেশাই তাতে। মেঘের খেয়া তোমায় ভালোবেসে  খুব অকারণ বৃষ্টি ঝড়ায় রাতে।। তোমায় ভেবে আমার কাটে প্রহর তোমায় নিয়ে লিখি দিবানিশি। ঘুমের অভাব, আমার ক্লান্ত শহর শহরে তোমার ঘুম পাড়ানির মাসি।। কাব্যি বলার প্রহরগুলোয় হারাই সময় কাটে শব্দ নিয়ে মেতে, আমার হাতটা তোমার পানে বাড়াই পাই না ছোঁয়া তোমার আঙ্গুলেতে।। ভুলগুলো সব এমনি মুছে ফেলো, কান্না আসুক, হেসো সকাল সাঁঝে। তোমায় নিয়ে আমার গানের কলি মূর্ছনাতে অহর্নিশ বাজে।। আমার সুরে সুর মেলালে যবে আকাশ জুড়ে মেঘ করেছিলো খুব। ভালোবাসা ঠিক তেমনই রবে, দিঘির ছায়ায় শিশির ভেজা ডুব।। চারিদিকে সব 'নেই' এর হাহাকার তবুও চোখে তোমায় চোখের মায়া। আঁকড়ে রাখো যতই স্মৃতির পাহাড় দিঘির জলে পরে নাকো পদ্মপাতার ছায়া।। ~আবীর

মতি মাঝি

Image

রিবি

Image
লাল বাতিটা জ্বলছে নিভছে ক্রমশ! লক্ষণ সুবিধার না। মহাকাশযানের নিয়মাবলি অনুযায়ী লাল বাতি তখনই জ্বলবে যখন মহাকাশযান নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। স্পেস-ক্যাপ্টেন রিবি তা জানে৷ সে কিছুদিন হলো আন্ত-গ্যালাক্টিক মহাকাশযান চালনার লাইসেন্স পেয়েছে। এটাই তার প্রথম আন্ত-গ্যালাক্টিক মিশন। এর জন্য ১০ বছর ট্রেনিং নিতে হয়েছে তাকে। অন্তঃ-গ্যালাক্টিক মহাকাশযান পরিচালনা করেছে অনেক বিগত দশ বছরে। খুব সফলতার সাথে একটি নিযন্ত্রণ হারানো যাত্রীবাহী মহাকাশযানকে সে বৃহস্পতির ওপর অবতরণ করিয়েছে! এর পরপরই মহাকাশ সংস্থাগুলোর নজর কাড়ে সে এবং যে লাইসেন্স পেতে নূন্যতম ১৫-২০ বছর লাগে তা সে ১০ বছরের মাথায় পেয়ে যায়! তার প্রথম মিশন পড়ে সৌরজগতের পার্শ্ববর্তী গ্যালাক্সির গ্রহগুলোর ওপর সার্ভে করা। মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীদের ধারনা সেসব গ্রহগুলোর ভূগর্ভে তেজস্ক্রিয় ইউরেনিয়াম টুথার্টিফাইভ এর খনি রয়েছে! সেখান থেকে যদি তা উত্তোলন করা এবং তা হতে শক্তি উৎপাদন সম্ভব হয় তাহলে বিদ্যুৎ এর জন্য পৃথিবী কিংবা চাঁদের পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ওপর চাপ-নির্ভরশীলতা কমে আসবে। এই প্রথম কোন মানব বহনকারী মহাকাশযান পাঠানো হয়েছে সে গ্যালা...

মোহ

Image
যেতে হবে যখন চলেই যাও নাহয় বাঁধা দেয়া যখন বৃথা... যতদূর অপলক আঁখি, জানি- খুঁজে ফেরে তাহার শেষ ছায়াখানি ততক্ষণে সে যে হয়েছে আড়াল বাঁধা দেয়া যে বৃথা! সময় যে গড়ালো তার স্রোতের ধারায় কালো চুলে শুভ্র মেঘের দল আমি যতই চেয়ে থাকি পথপানে- অশ্রু নিছক স্রোতস্বিনী চোখের কোণে! কবে যে সে হয়েছে আড়াল বাঁধা দেয়া যে বৃথা! যেতে হলেই কি চলে যেতে হয়? ফুরোয়নি তো সব কথা! গেছে চলে যাক, যাক, যাক... তারে বাঁধা দেয়া যে বৃথা। জোছনায় ঝড়ালে আলো নিশুতি রাতে প্রদীপ যে হার মানে তাহার কাছে। দুয়ারে তব সময় কাটেনা ধীরে- আসিবার ইচ্ছে হলে, আবার আসিও ফিরে। কবে যে হয়েছিলে আড়াল বাঁধা দেয়া ছিলো বৃথা। যেতে হলেই কি চলে যেতে হয়? ফুরোয়নি তো সব কথা! গেছে চলে যাক, যাক, যাক... তারে বাঁধা দেয়া যে বৃথা।

আঁধারের আর্তনাদ

Image
এতদিন এখান-সেখান থেকে প্লট নিয়ে বানিয়ে বানিয়ে বেশ গল্প ফেঁদেছি। তার একটাও কোন পত্রিকায় ছাপা হয়নি। তাই বলে আমি যে দমে গিয়েছি তা কিন্তু না। কলম আমার থেমে থাকেনি। লিখেছি অনবরত। কিন্তু আজ যে গল্প আমি লিখতে বসেছি তা কোন কল্পনা নির্ভর নয়। সত্য, কালোয় ছেয়ে যাওয়া রাতের আকাশের মতই সত্য এবং স্পষ্ট তা আমার কাছে। আজও এক দুঃস্বপ্নের মতো তাড়া করে বেড়ায় সেই দুঃসহ স্মৃতি।রহস্যের চাদরে ঢাকা, ইতিহাসের এক নির্মম সত্য। ১ প্রচণ্ড এক ঝাঁকুনিতে ঘুম ভাঙল। কানে গোঁজা ইয়ারফোনে তখনও পিঙ্ক ফ্লয়েড বেজে চলেছে, So you run and you run to catch up with the sun but it’s sinking….। কিছুক্ষণ সময় লাগলো নিজের অবস্থানটা বুঝতে। আমি আছি এগারো সিন্ধুর এক্সপ্রেসের শোভন শ্রেনির একটা সীটে। যাচ্ছি নীলগঞ্জ- আমার বড় মামার বাসা। সিগন্যাল পরায় এতো জোরে ট্রেন ব্রেক কষেছে যে আমার ঘুমটাই ভেঙ্গে গেলো। ভৈরব জাংশন পার হয়েছি সেই কখন। এখন তো আর সিগন্যালে আটকানোর কথা না। হয়তো কোন গণ্ডগোল হয়েছে। বাংলাদেশের ট্রেনের কোন ভরসা নেই।   বেশ কিছুদিন হল মাথা পুরো ফাঁকা, কোন গল্পের প্লট নেই মাথায়। তারওপর সেমিস্টার শেষে বেশ কিছুদিন ছুটিও পেয়ে গে...

শিরোনাম

Image
আমার এই ইটপাথরের জঞ্জাল তোমার মুঠোভরতি স্বপ্ন রঙিন রেশ- গড়ায় গড়াক সময়ের মাঝে ক্ষণ। যতটা দূর ততটাই আপন, এই যদি হয় অর্থ, তাহলে আর কাছে আসার মানে কি দাঁড়ায়? দূরত্বটুকু স্কেলের মাপই কেবল? মাঝেমাঝে তা স্কেল ছাড়িয়ে যায়। তারিখ দিয়ে হস্তাক্ষরে লিখে রেখো, হারাবো যেদিন অনায়াসে গোধূলির কোলে এলোমেলো চুল আর কাঁধে মলিন এক ঝোলা নিয়ে। জেনে রেখো এই নিরুদ্দেশের চিঠি পাবে না কোনদিন তোমার ডাকবাক্সের স্পর্শ। যে দূরত্ব স্কেলের গন্ডি পেরিয়ে যায় অসীমের ছোঁয়ায় সেখান থেকে চিঠি লেখা যায় না প্রিয়!

প্রিয় পদরেখা

Image
আমি যেদিন ছুয়ে দিব আকাশটাকে মেঘের স্পর্শ গায়ে মেখে, উড়ে যাব দুরে কোথাও তখন কি কেউ ভাববে, কোথায় গেলাম? কেন এই শহরের ধুলোয় আমার পদচিহ্ন পরে না? কেন বাতাসের কার্বনডাইঅক্সাইড বাড়ে না- আমার প্রতিটা নিঃশ্বাসে? ভাববে না কেউ এসব। ভেবেই বা কি লাভ? কেউ তো জানে না আমি আকাশ ছুয়েছি, চলে গেছি নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে অবিনশ্বর পৃথিবীতে। আমি যে আকাশ ছুয়েছি! সে কথা জানবে না কেউ। আমার না ফেরা কাওকে ভাবাবে না, একসময় মুছে যাব পৃথিবীর আলো-ছায়া থেকে। আর তো আসবো না ফিরে আমি যে আকাশ ছুয়েছি! চলে গেছি অনেক দূরে! ঝড়ে নীড় ভাঙা পাখি যদি উড়ে চলে যায়- সে কি কোনদিন আর আসে ফিরে?